হিমুর_দ্বিপ্রহর ( মেডিকেল সিরিজ)💔

#হিমুর_দ্বিপ্রহর ( মেডিকেল সিরিজ)💔

👨: স্যার আপনার মাথার হ্যাট টা একটু লাগবে!

 আনিস সাহেব মুখ থেকে চুরুট টা নামিয়ে হিমুর দিকে তাকালেন। সাহিত্যের ভাষায় যাকে বলে অগ্নিদৃষ্টি!

👨‍✈️: what nonsense ! কি বলছো এসব? জানো আমি কে?

👨: স্যার জানিনা! আপতত জানতেও চাইনা! আপনার হ্যাট টা মেস্কেন্দারের পছন্দ হয়েছে! সে একবার পড়েই ফেরত দিয়ে দিবে!

👨‍✈️: কি আব জাব বলছো? Who is this মেস্কেন্দার?

👨: স্যার সে একজন ভিক্ষুক! মেইল ট্রেনে ডে সিফট এ ভিক্ষা করে! তার ছোট একটা ছেলেও আছে!সেই ছেলেটাই আপনার হ্যাট টা একবার পড়ে দেখতে চায়!ভিক্ষুক হলেও সে অতি ভদ্রলোক!

👱🏻‍♀️: বাবা তুমি শান্ত হও! নাহলে আবার প্রেশার বাড়িয়ে ফেলবে।
excuse me ! আপনি বোধ হয় জানেন না আমার বাবা পুলিশের ex IGP ! এধরনের সস্তা jokes আপনি আর কখনো করবেন না!now get lost !!

👨: জি আচ্ছা! তবে আমার মনে হয় আপনাদের আজ সিলেট যাওয়া হবে না!

👱🏻‍♀️: oh ! really ? আপনি বুঝি গণক ঠাকুর?

👨: আমি হিমু ! হিমুরা অনেক কিছু বলতে পারে! চলি

🧔🏿: হিমু সাহেব! আপনাকে মিছিমিছি লজ্জায় ফেললাম! সব এই বদ পোলার জন্য! কষ্ট পাইয়েন না! জগতে যাদের যত টাকা তাদের মেজাজ তত চড়া!এই দেহেন না! আমার টাকাও নাই!মেজাজ ও নাই! পোলাডা একটা সিরিঞ্জ কিনা চাইলো,পানি ভরে নাকি খেলবে!কিনা দিলাম! শখের দাম সবচেয়ে বেশি! ভাতের দাম ১২ আনা হলে শখের দাম হইলো গিয়া ১৪ আনা!

প্লাটফর্মের ঐ পাশ থেকে কান্নার শব্দ আসছে!হিমু তাকিয়ে দেখলো Ex IGP সাহেব বুকে হাত দিয়ে ছটফট করছে! আর তার মেয়ে তাকে বাতাস করছে! ছোট খাটো একটা জটলা সেখানে। হিমু মেস্কেন্দার কে নিয়ে সেখানে চলে গেলো।

👱🏻‍♀️: বাবা কি হয়েছে তোমার? হার্টের ব্যাথা টা আরো বাড়লো নাকি?

👨‍✈️: মা রে! প্রতি দমে দমে শ্বাসকষ্ট টা আরো বাড়ছে! জিহবার নীচে Heart এর ওষুধ দিয়েও কোন লাভ হচ্ছে না মা!

👱🏻‍♀️ : বাবা তুমি এতো ঘামছো কেন? pulse তো অনেক প্রায় ১০০! আর প্রেশার মেপে দেখলাম অনেক low !

👱‍♂️:মেস্কেন্দার ভাই, আমি কি আপনার বাচ্চার সিরিঞ্জ টা একটু নিতে পারি?

🧔🏿: আলবত পারেন! ঐ বদ পোলা, হিমু সাহেব কে সিরিঞ্জ টা দে!

হিমু সিরিঞ্জ থেকে সূচ টা খুলে IGP সাহেবের সামনে গেলেন! বেচারার চোখ উল্টে গেছে! Trachea এর ওখানে হাত দিতেই বুঝলেন Thachea sift হয়েছে Left দিকে!জীবনে অনেক সিগারেট খেয়ে খেয়ে lung টা কে ঝাঝড়া বানিয়ে ফেলেছেন! সেই lung এর কোন এক অংশ সামান্য ফেটে গিয়ে শ্বাস নেবার সময় pleural space এ বাতাস ঢুকছে! কিন্তু সেই বাতাস আর শ্বাস ছাড়ার সময় lung দিয়ে বেড় হচ্ছে না! তাই pleural space এ বাতাস গিয়ে গিয়ে lung কে একদম চাপ দিয়ে ছোট বানায়ে ফেলতেছে! ও দিকে venous return ভাল ভাবে হচ্ছে না এই চাপের জন্য! তাই hypotension হচ্ছে!
আর sympathetic activity বাড়ার কারনে তার pulse বেড়ে গেছে!
একেই
Tension Pneumothorax বলে! হিমু তার হাতের সুচ টা IGP সাহেবের right 2nd intercostal space বরাবর ঢুকিয়ে দিল! শিষ দেবার মত শব্দ করে অনেক বাতাস বেড় হয়ে আসছে! IGP সাহেব আবার শ্বাস নিতে শুরু করলেন!হিমু মৃদু হেসে হাটতে শুরু করলো।

👱🏻‍♀️: শুনুন! আমার নাম রূপা। আমি আগের দুর্ব্যাবহারের জন্য অনেক সরি!
আপনি কি দয়া করে এক কাপ চা খাবেন? আমার flask এ সব সময় আমি চা রাখি! কিংবা কিছু চাইবেন আমাদের কাছে?আমরা খুব কৃতজ্ঞ হবো!

👨: হিমুরা নিজের জন্য কিছু চায় না! তারপর ও দিতেই যখন চাচ্ছেন! আপনার বাবার হ্যাট টাই দিন?

মেস্কেন্দার অনেক খুশি! তার ছেলের মাথায় সাহেবের টুপি!
সে থুথু ফেলতে ফেলতে বললো হিমু সাহেব চলেন আজকে আমি আপনারে কুদ্দুসের মোরগ পোলাও খাওয়ামু!

👱‍♂️: খাওয়াবেন? ঠিক আছে চলুন!

রূপা দূর থেকে এক দৃষ্টি তে হিমুর দিকে তাকিয়ে আছে। হিমুর উপর এখন দ্বিপ্রহরের রোদ। রূপার চোখ দিয়ে অকারনেই পানি পরছে! হলুদ রং টা বড়ই নিসঙ্গগের!