Buy me a Coffee!!

Buy me a Coffee!!
Thank you!

History_Behind_Diagnosis: 28 .

#History_Behind_Diagnosis: 28 

.
৫০ বছর বয়স্ক একজন নরমোটেনসিভ, নন-ডায়াবেটিক ফিমেল পেশেন্ট। হঠাৎ করে একদিন উনি খেয়াল করলেন উনার ডান চোখের পাতা পুরোপুরি খুলতে পারছেন না। চোখে কোনো আঘাত পান নি। চোখ দিয়ে পানি পড়া, চোখ লাল হয়ে ওঠা এরকম কোনো সমস্যাও নেই। যেহেতু চোখের সমস্যা, চোখের ডাক্তার দেখালেন। আই ড্রপ সহ কিছু চিকিৎসা দেয়া হল। কিন্তু কোনো উন্নতি নেই। বরং ধীরে ধীরে সমস্যা টা আরো বাড়ছে। আগের চেয়ে ডান চোখের পাতা টা ধীরে ধীরে নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে।
.
উন্নতি হচ্ছে না দেখে আবার গেলেন। আবারও ঔষধ চেন্জ করে দেয়া হল, কিন্তু তাতেও কোনো উন্নতি নেই।
এভাবে করতে করতে উনার বাম চোখেও একই সমস্যা দেখা দিল। প্রায় ৫-৬ বার চোখের ডাক্তার দেখানো হল।
কিন্তু কোনো উন্নতি নেই। বরং ধীরে ধীরে সমস্যা বাড়ছে।
.
ইতিমধ্যে কেউ একজন উনাকে পরামর্শ দিলেন যে: শিরার সমস্যার জন্য এরকম হতে পারে, উনি যেনো একজন শিরার ডাক্তার দেখান (আমরা জানি, গ্রামের মানুষ নার্ভের সমস্যা কে শিরার সমস্যা বলে)। পরবর্তীতে উনি সাপ্তাহিক চেম্বারে নিউরোলজির একজন ডাক্তার কে দেখান। ঐ ডাক্তার উনাকে দেখে NINS এ যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। কিন্তু আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারনে পেশেন্ট ঢাকায় যেতে পারে নি।
.
এদিকে দিন দিন উনার সমস্যা আরো বাড়ছে। উনি ঠিকমত তাকাতে পারছেন না। কারো সাথে কথা বলতে হলে ঘাঁড় বাঁকা(নেক এক্সটেনশন) করে তাকাতে হচ্ছে, এভাবে করতে করতে ঘাঁড় ব্যাথা হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি নেই। ঐ অবস্থায় শারিরিক দূর্বলতার জন্য অন্য আরেকজন ডাক্তার কে দেখান।
তাঁর কাছে গিয়ে রুটিন চেক আপ এ পেশেন্টের হাইপারটেনসন এবং হাইপোথাইরয়েডিজম ধরা পড়ে।
সেই অনুযায়ী ট্রিটমেন্টে নেন এবং ফলো-আপ এ দেখাও করেন, কিন্তু চোখের সমস্যার কোনো উন্নতি হয় নি। পেশেন্টের ভাষ্যমতে, চোখের সমস্যার কথা জিজ্ঞেস করলে ঐ ডাক্তার পেশেন্ট কে বলেছেন হাইপোথাইরয়েডিজমের জন্যই উনার চোখে এমন  সমস্যা হচ্ছে!
.
এভাবে ইতিমধ্যে ৬-৭ মাস কেটে গেল। রিসেন্টলি পেশেন্ট তার থাইরয়েডের সমস্যার জন্য Dr Debasish Ghosh (FCPS-Medicine, MD-Endocrinology) স্যারের চেম্বারে আসেন। স্যার পেশেন্টের হিস্ট্রি নিয়ে এবং এক্সামিনেশন করে প্রাথমিক ভাবে Myasthenia Gravis ডায়াগনোসিস করেন এবং D/D তে Ocular Myopathy রেখে পেশেন্ট কে খুলনা মেডিকেল কলেজ হসপিটালে ভর্তি হতে বলেন। পরবর্তীতে পেশেন্ট আমাদের হসপিটালে এসে ভর্তি হয় এবং আমরা পুনরায় পেশেন্টের হিস্ট্রি নেই এবং এক্সামিনেশন করি। Bilateral Partial Ptosis এর পাশাপাশি পেশেন্ট শারিরিক দূর্বলতার হিস্ট্রি দিয়েছিলেন কিন্তু কোনো diurnal variation ছিল না(সবসময়ই শারিরিক দূর্বলতা থাকতো)। আরো  জিজ্ঞাসাবাদের পর পেশেন্ট জানায় সকাল বেলা যখন ঘুম থেকে উঠে তখন কিছুটা চোখ খুলে তাকাতে পারে, এরপর সারাদিন আর পারে না। পাশাপাশি টুকটাক ঘরোয়া কাজ করতে গেলে (যেমন: শাকসবজি, মাছ কাটা) পেশেন্টের দূর্বলতা লাগে, বসা থেকে উঠে দাঁড়াতে দূর্বলতা লাগে/শক্তি পায় না।
.
কিন্তু নিউরোলজিক্যাল এক্সামিনেশনে
Cranial Nerve: Normal.
Motor system: Muscle tone, Muscle power,  Reflex, Coordination, Gait -- all are Normal...  Fatigibility test/Ceiling test, Counting test, Romberg's test -- all are Negative...
Involuntary movement-- Absent... 
Ice on Eyes test-- Not done.
Sensory: Intact
Cerebellar function: Normal.
.
রুটিন ইনভেস্টিগেশনে RBS, S. Creatinine, S. Electrolyte নরমাল। পেশেন্ট আর কোনো দামি ইনভেস্টিগেশন করতে আগ্রহী ছিল না বিধায় স্যার ওনাকে Pyridostigmine লো ডোজে স্টার্ট করে অবজার্ভেসনে রাখার প্ল্যান করেন (মূলত এই জন্যই স্যার ভর্তি থাকতে বলেছিলেন)। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল, মাত্র দু দিন ঔষধ খাওয়ার পরই পেশেন্ট একেবারে নরমাল মানুষের মত তাকাতে পারে এবং আমাদের কে না জানিয়েই হসপিটাল ছেড়ে চলে যায়। পেশেন্ট ভেবেছিল তাঁর এই সমস্যা আর কখনো ভালো হবে না।
পেশেন্টের ড্রামাটিক ইমপ্রুভমেন্ট দেখে আশেপাশের রোগীরাও অবাক!
.
পরবর্তীতে স্যার জানিয়েছেন যে, স্যারের প্ল্যান ছিল এই পেশেন্টের হাইপোথাইরয়েডিজমের কারন খুঁজে বের করা। কেননা তাঁর হাইপোথাইরয়েডিজম যদি কোনো অটোইমিউন ডিজিজে হয়ে থাকে তবে পেশেন্টের Myasthenia Gravis & Hypothyroidism দুটোই কোরিলেট করা সম্ভব হবে। স্যার অল্প কথায় ডায়াগনোসিস সম্পর্কেও বলেছিলেন। এই পেশেন্টের ক্ষেত্রে Bilateral Ptosis যেসব কারনে হতে পারে সেগুলো হল: Myasthenia gravis, Ocular Myopathy, Oculopharyngeal Myopathy, Facioscapulohumeral Myopathy, Myotonia dystrophica, Tabes dorsalis, Bilateral Horner Syndrome(rarely). এর মধ্যে Bilateral Partial Ptosis এর সবচেয়ে কমন cause হল Myasthenia gravis, তাছাড়া (Ocular Myopathy বাদে) অন্যান্য ডিফারেন্সিয়াল গুলোর পক্ষে স্পেসিফিক কোনো ফিচার ছিল না। বাকি ছিল Ocular Myopathy.
তাই Pyridostigmine এ রেসপন্স না করলে Ocular Myopathy কে ডায়াগনোসিস হিসেবে রাখার প্ল্যান ছিল স্যারের। যদিও পেশেন্টের আর্থিক অস্বচ্ছলতার দরুন ফার্দার  ইভালুয়েশন করা সম্ভব ছিল না।
.
#এরকম কাছাকাছি হিস্ট্রি(Bilateral Partial Ptosis, more in evening/night) নিয়ে আমাদের মেডিকেল কমিউনিটির এক ছোট বোন ঢাকায় কয়েকজন চক্ষু ডাক্তার দেখান। কিন্তু তার কমপ্লেইন কেউ তেমন গুরুত্ব দেন নি। পরবর্তীতে দেশের বাইরে গিয়ে Myasthenia gravis ডায়াগনোসিস হয়েছিল।
#আরেকজন পেশেন্ট পেয়েছিলাম যিনি আমাকে এরকম হিস্ট্রি দিয়েছিলেন যে: ওনার খাবার চিবিয়ে খেতে সমস্যা হত, খাবার গিলতে সমস্যা হত, চুল আঁচড়াতে সমস্যা হত, বসা থেকে উঠে দাঁড়াতে কষ্ট
হত। এসব সমস্যা নিয়ে তিনি কয়েকজন ডাক্তার দেখিয়েছিলেন। সর্বশেষ একজন ডাক্তার ওনাকে MRI of Brain করতে দেন। MRI তে Olfactory Groove Meningioma আসায় মেডিসিন স্পেশালিস্ট পেশেন্ট কে একজন নিউরোসার্জন এর কাছে রেফার করেন। পরবর্তীতে নিউরোসার্জনের সাথে দেখা করেন, কিন্তু অপারেশন খরচ শুনে পেশেন্ট একেবারে দেশের বাইরে গিয়ে অপারেশন করার ডিসিশন নেন। দেশের বাইরে গিয়ে ওনার ডায়াগনোসিস হয়: Myasthenia Gravis.
ডিসচার্জ পেপারে লিখা ছিল: Myasthenia Gravis (Musk antibody positive, CT Thorax: No Thymoma, Olfactory Groove Meningioma: Incidentally detected)। সেখান থেকে পেশেন্ট কে Myasthenia Gravis এর ট্রিটমেন্ট দিয়ে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং জানানো হয় যে ব্রেইনের অপারেশন এখন এতটা আর্জেন্ট নয়, পরবর্তীতে করলেও চলবে। 
....
আমাদের দেশের ডাক্তারদের ছোটো করা উদ্দেশ্য নয়। জাস্ট এক্সপেরিয়েন্স শেয়ার করেছি। দয়া করে কেউ নিজের গায়ে নিবেন না।
আর অসংখ্য ধন্যবাদ ডা. দেবাশীষ স্যার(এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, এন্ডোক্রাইনোলজি, কেএমসিএইচ) কে। আমার দেখা অন্যতম একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। খুবই নলেজেবল, একাডেমিক, এনার্জেটিক এবং স্টুডেন্ট ফ্রেন্ডলি একজন টিচার। পড়তে ভালোবাসেন, পড়াতে ভালোবাসেন। স্যারের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি, প্রতিনিয়ত শিখছি। স্যারের সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করি সবসময়।
...

No comments

Theme images by follow777. Powered by Blogger.