Buy me a Coffee!!

Buy me a Coffee!!
Thank you!

History_Behind_Diagnosis: 29

#History_Behind_Diagnosis: 29

#Every_Death_Should_Be_Analysed
(প্রথমেই বলে নিচ্ছি, এটা কোনো এনালাইস্ড কেইস নয়। শুধুমাত্র আমাদের জুনিয়রদের সতর্কতা এবং একাডেমিক আলোচনার জন্য শেয়ার করছি।)
.
ইন্টার্নশীপ শুরু করার কিছুদিন পরের ঘটনা। তখন সার্জারী তে প্লেসমেন্ট। একজন ফিমেল পেশেন্ট, বয়স ৩০ এর কম। কিছুদিন পর পর পেটে ব্যাথা এবং বমির সমস্যা(specially post prandial nausea/vomiting) নিয়ে হসপিটালে ভর্তি হন। এন্ডোস্কোপি সহ অনেক টেস্ট করেও কোনো কারন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এবারও একই সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। আরেকজন পেশেন্ট ছিলেন, পুরুষ, বয়স ৫০ এর কাছাকাছি। Large gut malignancy সাসপেক্টেড ছিল, পরের দিন সকালে ওটি তে নেয়ার কথা।
.
সেদিন দুপুরে এবং বিকেলে দু'জন রোগীর হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হয়(আমি তখন ওয়ার্ডে ছিলাম না)। আমি নাইট ডিউটি তে গিয়ে দেখতে পাই, একজন(মহিলা) কে ওয়ার্ডে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। অন্যজন(পুরুষ) কে অলরেডি আইসিইউ তে শিফ্ট করা হয়েছে, আমাকে হ্যান্ডওভার দেয়া হয়েছে। দুজন রোগীই গত কয়দিন যাবত মোটামুটি সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের মতই কথাবার্তা বলছিলেন(কোনো একিউট ইমার্জেন্সি/এলার্মিং কন্ডিশন ছিল না)। আমি একটু কৌতুহলী মানুষ। তাই সব কিছুর পেছনের কারন খোঁজার চেষ্টা করি। কিন্তু হঠাৎ করে কেনো এমন হল আমি হিসেব মেলাতে পারছিলাম না!
.
তবে মহিলা রোগীর ভাই ফ্যাটিসল স্যালাইন দেখিয়ে আমাকে বললো, এই স্যালাইন লাগানোর কয়েক ঘন্টা পর থেকেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। স্যালাইন দেয়ার আগে রোগী নিজে নিজেই হেঁটে বেড়িয়েছে, কথা বলেছে কিন্তু স্যালাইন দেয়ার দু/তিন ঘন্টার মাঝে হঠাৎ করে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। লাংস অসকাল্ট করে সিগনিফিক্যান্ট কিছু বুঝতে পারলাম না। রেস্পিরেটরী ডিসট্রেস ছিল খুব। পালস রেট একটু বেশি ছিল, বিপি নরমাল ছিল। আমি প্রথমে রোগীর লোকের  কথায় গুরুত্ব দেই নি। ভাবলাম ইয়াং ফিমেল পেশেন্ট, চেহারায় কেমন যেনো এংক্সাইটি লুক,, হয়ত Psychogenic Hyperventilation হতে পারে! আগে থেকেই O2 inhalation, Inj. Hydrocortisone, Nebulization with windel plus অর্ডার দেয়া আছে। তারপরেও পেশেন্ট পার্টির সাথে অনেক লোকজন দেখে নিজের সেফ্টির জন্য ফ্যাটিসল স্যালাইন আপাতত অফ রাখতে বলি(যেহেতু তাদের ভাষ্যমতে স্যালাইন দেয়ার কিছুক্ষণ  পর থেকেই সমস্যাটা হচ্ছে)।
.
পরে আইসিইউ তে গিয়ে দেখলাম অন্য রোগীরও ফ্যাটিসল চলছে। ওনার ক্ষেত্রেও সকাল বেলা  ফ্যাটিসল স্টার্ট করার কিছুক্ষণ পর থেকে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ওয়ার্ডে মেডিকেল ম্যানেজমেন্ট এ যখন কাজ হচ্ছিল না তখন দুপুর/বিকেলের দিকে আইসিইউ তে শিফ্ট করা হয়। কিন্তু পেশেন্টের পূর্ব থেকে Asthma, COPD বা কোনো লাং ডিজিজ ছিল না, MI এর কোনো হিস্ট্রি/ ফিচারও  ছিল না, নরমোটেনসিভ, নন-ডায়াবেটিক পেশেন্ট।
.
কী মনে করে যেনো দুজন রোগী কেই আমি সিরাম ইলেক্ট্রোলাইট করতে দিয়েছিলাম। কিন্তু রাতের বেলা  করা সম্ভব হয় নি। আইসিইউ পেশেন্ট কে যখন দেখতে যাই তখন পেশেন্ট প্রায় ক্লিনিক্যালি ডেড, পালস-বিপি কিছু পাওয়া যাচ্ছিল না। আইসিইউ এর ঐ রোগী রাতেই এক্সপায়ার করে। অথচ উনিও গত ক'দিন মোটামুটি সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের মতই কথাবার্তা বলছিলেন(কোনো একিউট ইমার্জেন্সি/এলার্মিং কন্ডিশন ছিল না), অপারেশনের জন্য ওয়েট করছিলেন। ছোট্ট একটা মুদি দোকান করে কোনো রকমে সংসার চালাতেন। ওনার ছোটো একটা ছেলে ৮ম শ্রেণীতে পড়ে। হসপিটালে সবসময় সে তার বাবার সাথে ছিল। সেদিন ছোট্ট ছেলেটার সামনে  ডেথ ডিক্লেয়ার করার পর থেকে খুবই খারাপ লাগছিল।
.
মন খারাপ করে হসপিটাল থেকে হোস্টেলে আসলাম।  সকালে এসে ফেসবুকে ঢুকতেই Dr. Kamruzzaman Haematologist (Asst. Prof, Haematology, DMCH) স্যারের একটা পোস্ট চোখে পড়লো। পোস্ট টা পড়ে জানতে পারলাম:
"ফ্যাটিসল দিলে কাপুনিসহ জ্বর, এলার্জি, বমিভাব, বমি, মাথা ব্যাথা, মাথা ঘুরানি, হাইপ্রেসার, শ্বাসকষ্ট, হিমোলাইসিস, ইলেক্ট্রোলাইটস ইমব্যালেন্স, থ্রম্বোসিস হতে পারে যাতে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।"
.
কমেন্ট সেকশনে আমার অভিজ্ঞতা টি স্যার কে জানালাম। তাই আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে হয়ত পালমোনারি এমবোলিজম'ই ঐ পেশেন্টের মৃত্যুর কারন। আমার মনে হয় টারসিয়ারী লেভেল হসপিটাল গুলোতে প্রতিটা মৃত্যুর পর ডেথ এনালাইসিস হওয়া উচিত। এতে হয়ত আমাদের জুনিয়রদের ছোটা-বড় নানান ভুলত্রুটি বেরিয়ে আসবে, অভিজ্ঞতার ভান্ডারে অনেক নতুন কিছু যোগ হবে, নিজেদের জ্ঞান কে আরো শাণিত করা সম্ভব হবে এবং ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের আরো দক্ষ করে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।যদিও পেশেন্ট লোডের কারনে সেটা অনেক কঠিন, তারপরেও এটলিস্ট ইমপর্ট্যান্ট কেইস গুলোর ক্ষেত্রে করা যেতে পারে!
.
আবারো বলছি, এটা কোনো এনালাইস্ড কেইস নয়। জাস্ট একটা পসিবিলিটি শেয়ার করা হল।ওয়ার্ডে আমরা অনেক পেশেন্টকেই ফ্যাটিসল দিয়েছি/দিয়ে থাকি, কিন্তু সবার ক্ষেত্রে যে এমনটা হয়েছে/হবে তা নয়! মূলত ফ্যাটিসল দেয়ার ক্ষেত্রে কী কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত, কী কী কমপ্লিকেশন ফেইস করতে হতে পারে এবং ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট কী হওয়া উচিত এসব বিষয়ে একাডেমিক আলোচনার জন্য এই পোস্ট। এতে আমাদের জুনিয়রদের অনেক উপকার হবে। আর Dr. Kamruzzaman স্যার কে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর পোস্ট টির জন্য। স্যারের পোস্টটি আমি এখানে কপি-পেস্ট(ছবি সহ) করে দিচ্ছি।
-----------------------------------------------------------

রক্তের রঙ লাল কিন্তু সাদা দেখাচ্ছে কেন?(ছবি তে দেখুন)

মাইক্রোস্কোপ দিয়ে রক্তের স্লাইড দেখার পাশাপাশি অটোমেটিক সেল কাউন্টারের প্যারামিটার মিলিয়ে দেখা হয়।প্যারামিটার বলতে সাধারণত রক্তের হিমোগ্লোবিন, ডব্লিউ বি সি, প্লেটলেট স্বাভাবিক আছে কিনা তা দেখা হয়। তবে একজন হিমাটোলজিষ্ট হিসাবে খুটিনাটি দেখার চেষ্টাই করা হয়।
.
একটা প্যারামিটারে দেখা গেল রক্তের হিমোগ্লোবিন, ডব্লিউ বি সি, প্লেটলেট স্বাভাবিক থাকলেও " রুল অব থ্রি" অর্থাৎ আরবিসি, হিমোগ্লোবিন ও হিমাটোক্রিট এর আনুপাতিক মিল নাই। ফলে রক্তের অস্বাভাবিকতা আছে বা রিপোর্টে ভুল আছে ধরে নেয়া হয়।
যে টেকনিশিয়ান ব্লাড টেনে স্লাইড বানিয়েছিল তাকে ডাকা হলো। কিছু জিজ্ঞেস করতেই বলল- " স্যার, রোগীর রক্তটা কেমন যেন ঘোলা ঘোলা ছিল"। তথ্য উৎঘাটনের আগ্রহ আরো বেড়ে গেল।
.
তাই রিপোর্ট দেয়া হলো না। রোগীর লোক ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক যাতে যোগাযোগ করে সে জন্য আমার ফোন নাম্বার দেয়া হলো। টেকনিশিয়ানকে পুনরায় ব্লাড টেনে পরীক্ষা করতে বলা হলো (ফ্রি অব কষট)।
তিন দিন পর পুনরায় রক্তের পরীক্ষার সময় রক্তের রংয়ের ও পারামিটারের কোন অস্বাভাবিকতা ছিল না।
অনুসন্ধান করে জানা গেল সেদিন রোগীটা ফ্যাটিসল নামক একটা স্যালাইন নিয়েছিল। (বিঃদ্রঃ যে হাতের শিরার মাধ্যমে স্যালাইন/ঔষধ দেয়া হয় রক্তের পরীক্ষার জন্য সে হাতের ব্লাড নেয়া হয় না)।
.
ফ্যাটিসল কী?
রিফাইন সয়াবিন তেল, ডিমের পিউরিফাইড লেসিথিন, গ্লিসারল (১০% ফ্যাট ইমালসন)।

ফ্যাটিসল কখন দিতে হয়?
খাবারের মধ্যে যে পুষ্টি থাকে তা পাচক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খাদ্য নালি শোষণ করে রক্তে সরবরাহ করে যা লিভারে গিয়ে পরিপাকের মাধ্যমে শক্তিতে পরিনত হয়। পাচক রসের ঘাটতি, খাদ্যনালিতে সমস্যাজনিত কারণে রক্তে পুষ্টির ঘাটতি হলেই শিরার মাধ্যমে ফ্যাট, প্রোটিন, শর্করা জাতীয় পুষ্টির যোগান দেয়া লাগে। দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী রোগী যারা মুখে খেতে পারে না তাদের দেওয়া যায়।
.
ফ্যাটিসল কীভাবে দিতে হয়?
সেন্ট্রাল ভেলাস ক্যাথেটার (সি ভি লাইন), পেরিফেরালি ইনসারটেট সেন্ট্রাল ক্যাথেটার (পিক লাইন বা পি আই সি সি) এর মাধ্যমে দেওয়াই উত্তম। ৫ ফোঁটা প্রতি মিনিটে প্রথম দশ মিনিট। তারপরে  ১৫ থেকে ৩০ ফোঁটা প্রতি মিনিটে।
.
ফ্যাটিসল দিলে কী কী জটিলতা হতে পারে?
কাপুনিসহ জ্বর, এলার্জি, বমিভাব, বমি, মাথা ব্যাথা, মাথা ঘুরানি, হাইপ্রেসার, শ্বাসকষ্ট, হিমোলাইসিস, ইলেক্ট্রাইটস ইমব্যালেন্স, থ্রম্বোসিস যাতে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।

সাবধানতাঃ
কারণ অকারণে সেলাইন না দিই/নিই। এতে কোনো কোনো সময় হিতে বিপরীত হতে পারে।


No comments

Theme images by follow777. Powered by Blogger.