bcs

ইহা অনেক দীর্ঘ পোস্ট তবে কোন ক্যাডার এর নয়।বিসিএস প্রিলিমিনারি ৬ বার (৩৩-৩৮) টেকার অভিজ্ঞতা থেকে লেখা। তাই যাদের বিসিএস সিলেবাস সম্পর্কে ভালো ধারনা আছে তাদের সময় নষ্ট করার দরকার নাই.........................................
"বিসিএস প্রিলিমিনারী প্রিপারেশন এর সিলেবাস ভিত্তিক গাইডলাইন"........ এই লেখাটা তাদের জন্য যারা বিসিএস প্রিপারেশন নিতে গিয়ে অথই জলে হাবুডুবু খাচ্ছেন কি পড়বেন আর কি পড়বেননা তা নিয়ে!!!!!
শুরুতেই বলে নিচ্ছি আপনি শুধু প্রিলি পাশ করার জন্য পরীক্ষা দিচ্ছেন না। আপনি অবশ্যই ক্যাডার পাওয়ার জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছেন।তাই আপনার প্রিলি প্রিপারেশন এর সময় যেসব টপিকস থেকে লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্ন আসে অর্থাৎ লিখিত সিলেবাসে আছে সেগুলো বিস্তারিত পড়ার চেষ্টা করবেন তবে কোন ১/২ টপিকস বিস্তারিত পড়তে গিয়ে যেন প্রিলির সিলেবাসভিত্তিক প্রিপারেশন এর ক্ষতি না হয়।আপনাকে যেমন প্রিলি পাশ নিশ্চিত করতে হবে একই সাথে রিটেনে যেন খুব অসুবিধায় না পড়েন সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।বিস্তারিত আলোচনা করলে বিষয়গুলো বুঝতে সহজ হবে নিশ্চয়ই.............

১। বাংলা(৩৫)ঃ সাহিত্য-২০,ব্যাকরণ-১৫          সাহিত্য অংশের জন্য যেকোন বই। ব্যাকরণ  এর জন্য নবম-দশম বোর্ড বই এর পাশাপাশি সিলেবাসভিত্তিক যেকোন একটা গাইড।(বিঃদ্রঃ বিসিএস রিটেনে বাংলা সাহিত্য থেকে ৩০ মার্কস উত্তর দিতে হয়। প্রিলির সময়ই সাহিত্য অংশ ভাল করে পড়া যেতে পারে।তাই বলে এক একটা উপন্যাস পড়তে বসে না যাওয়াই ভালো।যাদের প্রিপারেশন ভালো তারা চাইলে  Google সার্চ করে কিছু নামকরা উপন্যাস এর থিম জানতে পারেন। ব্যাকরণ অংশে বাংলা বানান প্রিলির সময়ই ভালোভাবে আয়ত্ত করা ভালো।এতে করে রিটেনে বানান ভুল কম হবে।এছাড়া বাক্য শুদ্ধিকরণ ৬ মার্কস রিটেনে কাজে দিবে।প্রবাদ-প্রবচন রিটেনে ৬ মার্কসের আসে। যেহেতু দীর্ঘ সময় পাওয়া যায় প্রিলি পরীক্ষার পূর্বে তাই মাঝে মাঝে কিছু প্রবাদ অর্থসহ মুখস্থ করা যেতে পারে।এতে রিটেনে পড়ার লোড কমবে।যেকোন বই থেকে নিজের সুবিধামতো কিছু প্রবাদ শেখা যেতে পারে।এছাড়া রিটেন সিলেবাসে বাংলা আর যা আছে তা রিটেনের সময়ই পড়লেই চলবে।)                ২।ইংরেজি(৩৫)ঃ  Literature - ১৫, Grammar - ২০  Literature  এর জন্য  Assurance   Digest এর literature অংশ অথবা যেকোন  English বইয়ের literature অংশ পড়লেই চলবে। (বিঃদ্রঃ  English  literature থেকে রিটেনে কিছু আসেনা তাই এটা শুধু প্রিলির জন্য। এখানে খুব বেশি জানার চেষ্টা করার দরকার নেই।ইরেজী সাহিত্যের স্টুডেন্ট হিসেবে বলছি বিখ্যাত কিছু লেখকের বইয়ের নাম, যুগ বিভাজন ও কিছু লিটারেরি টার্ম যেমনঃ simile/metaphor  এগুলো জানলেই চলে।এই অংশ থেকে বাংলা সাহিত্যের মতো কঠিন প্রশ্ন হয় না। এ অংশে মোটামোটি পড়লে ১০-১২ পাওয়া যায়।খুব বেশি পড়লেও ১২-১৩ পাওয়া যায়।১/২ টা uncommon আসে যা শুধু ইরেজির স্টুডেন্টরাই পারে অন্যরা প্রিলির সব বই বেটে খেলেও পাড়বেনা।তাই ১/২ টা প্রশ্নের মায়া ছেড়ে দেয়াই উত্তম।  Grammar এর ক্ষেত্রে যেকোন বই থেকে পড়তে হবে।এক্ষেত্রে বিভিন্ন পরীক্ষায় আসা বিগত প্রশ্ন থেকে ৪/৫ টা ক্ষেত্র বিশেষে ১০/১২ টা কমন আসে।তবে subject -verb agreement ভালোকরে জানলে রিটেনে কাজে দিবে কারণ রিটেনে ২০০ মার্কসই ফ্রি হ্যান্ড রাইটিং।তাই word meaning যতসম্ভব প্রিলির সময়ই শেখা উচিত।  Grammar অংশে কম পাড়বেন এটা মেনে নিয়ে আগাতে হবে। কারণ এই অংশে ভুল বেশি হয় অপশনগুলোর অর্থ খুব কাছাকাছি থাকে বলে।খুব কনফিডেন্ট না হলে বেশি না উত্তর করাই ভালো কারণ নেগেটিভ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।) ৩। বাংলাদেশ বিষয়াবলী (৩০)ঃ যেকোন একটা বই ১ম থেকে শেষ পর্যন্ত রিডিং পড়া।সংবিধানের (৩ মার্কস)জন্য সবমিলিয়ে ৭০-৮০ টা (১৫৩ এর মধ্যে) অনুচ্ছেদের শিরোনাম পড়া( যেমন ঃ প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল -১১৭,ন্যায়পাল-৭৭)। বিগত সালের প্রশ্ন পড়লেই অনেকগুলো শিরোনাম জানা হয়ে যাবে।এর বাইরে কতগুলো অনুচ্ছেদ,অনুচ্ছেদের শিরোনাম,তফসিল সংখ্যা, সংশোধনী,ও সংবিধান প্রণয়নের ইতিহাস জানলেই চলে।(বিঃদ্রঃ প্রিলিতে সংবিধান ভালো করে পড়া থাকলে রিটেনে ৩০-৫০ মার্কসের প্রিপারেশন কমপ্লিট হয়ে থাকবে।বাংলাদেশের ম্যাপ জানা থাকলে রিটেনে ও ভাইভাতে কাজে দিবে।তাই প্রিলির সময়ই ম্যাপ ভালো করে আয়ত্তে নিয়ে নেয়া ভালো। সিলেবাসে বাংলাদেশ বিষয়াবলীর যে ৯ টা চ্যাপ্টার এর নাম দেয়া আছে সেগুলো চ্যাপ্টার অনুসারে যেকোন বই থেকে পড়লেই চলবে)।৪। আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী (২০)ঃ আন্তর্জাতিক ম্যাপ সম্পর্কে ভালো ধারনা রাখতে হবে তাহলে পড়াটা সহজ হবে মনেও থাকবে বেশি।এরপর যেকোন একটা বই রিডিং পড়া।(বিঃদ্রঃ বিভিন্ন সংস্থা সম্পর্কে প্রিলিতেই ভালো পড়াশোনা থাকলে রিটেনে উপকৃত হওয়া যায়।যেমনঃ জাতিসংঘ থেকে প্রিলি ও রিটেনে প্রশ্ন আসে তাই এটা প্রিলির সময়ই ভালোভাবে পড়া উচিত।পরিবেশ ইস্যু থেকে প্রিলিতে ৪ মার্কস রিটেনেও ১০-২০ মার্কসের প্রশ্ন আসতে পারে।এক্ষেত্রে  COP সম্মেলন সবসময়ই গুরুত্বপূর্ন।ম্যাপ থেকে ভাইভাতে অনেককেই দেশ দেখাতে বলে তাই ম্যাপ জানা জরুরি )।  ৫।সাধারন বিজ্ঞান (১৫)ঃ এক্ষেত্রে যে বই সিলেবাস ফলো করেছে সেটা পড়া উচিত।তবে অনেক বই ৩৫ পূর্ববর্তী সিলেবাস অনুসারে সামান্য চেঞ্জ করে বাজারে বিক্রি হচ্ছে এগুলো না পড়াই ভালো কারণ পরিশ্রম বৃথা যাবে যদি সিলেবাস ভিত্তিক না পড়া হয়। (বিঃদ্রঃ নবম-দশম সাধারণ বিজ্ঞান বোর্ড বইটাও পড়া যেতে পারে রিটিনে ৬০ মার্কসের জন্য কাজে দিবে)।৬। কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি (১৫)ঃ সিলেবাসভিত্তিক যেকোন একটা বই পড়লে ভালো।(বিঃদ্রঃ ৩৮ তমতে দেখলাম মাহবুবস আইসিটি বইটা ভালো করেছে। এটি ইজি কম্পিউটার এর চেয়ে অনেক ভালো এবং সিলেবাস কভার করেছে।রিটেনে কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি আছে ২৫ মার্কসের তবে এ অংশের রিটেন প্রশ্ন সহজ হয় তাই এটা নিয়ে প্রিলিতে না ভাবলেও চলবে)।৭।গানিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা ( ৩০)ঃ গানিতিক যুক্তির জন্য প্রিলিতে ১৫ মার্কস হলেও এটিকে গুরুত্ব দিতে হয় কারণ রিটেনে ৫০ মার্কস।বোর্ড বই সিলেবাস ভিত্তিক প্রিলির সময় করতে পারলে রিটেনে কাজে দিবে অনেক।শর্টকাট শিখতে চাইলে বাজারের যেকোন একটা বই ফলো করলেই কিছু শর্টকাট নিয়ম শেখা যায়।(বিঃদ্রঃ যারা গনিতে দুর্বল তারা প্রিলির সময় থেকে গণিত ভালোকরে প্রিপারেশন নিলে রিটেন ও প্রিলি কোনটাতেই অসুবিধা হয়না।আর যারা টিউশনি করেন তারা নবম-দশম শ্রেনীর গণিত পড়ালে নিয়মিত প্রাকটিস হবে এবং পরীক্ষার হলে বেগ পেতে হবেনা।মানসিক দক্ষতা ভালো করে পড়া উচিত এটা যেমন প্রিলিতে মার্কস কেরি করতে সহায়তা করবে তেমনি রিটেনে ৫০ মার্কসের মানসিক দক্ষতায় সহায়তা করবে যদিও সিলেবাসে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছেম)। ৭।ভূগোল, পরিবেশ ও দুর্যোগব্যবস্থাপনা (১০)ঃ এজন্য আলাদা বই কিনে পড়া যায় অথবা বিজ্ঞান বইয়ে ভূগোল দেয়া থাকে আর বাংলাদেশ বইয়ে পরিবেশ ও দুর্যোগব্যবস্থাপনা দেয়া থাকে সেখান থেকে পড়লেই চলে।(বিঃদ্রঃ নবম- দশম শেনীর ভূগোল বই পড়া যেতে পারে)।৮।নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন (১০)ঃ অনেকেরই ধারনা এগুলো কমন আসেনা উত্তর করলেই ভুল যাবে।আসলে ইহা প্রচলিত ভুল ধারনা। অ্যাসিওরেন্স ডাইজেস্ট থেকে গড়ে ৫ টা কমন আসে।এগুলো মূলত ডাইজেস্ট থেকেই কমন পড়ে।কারণ যিনি বা যারা প্রশ্ন করেন তারাও বাজারে প্রচলিত কোন গাইড থেকেই এসব প্রশ্ন করেন যেহেতু অনার্সে এরকম কোনো সাবজেক্ট নেই।৷৷৷৷ সর্বোপরি নিজের উপর আস্থা রেখে প্রিপারেশন চালিয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।৷৷আর পরীক্ষার হলে মাথা ঠান্ডা রাখলেই আপনার প্রিপারেশন সম্পূর্ণ প্রয়োগ সম্ভব। সকলের জন্য শুভকামনা রইলো।