রেসিডেন্সি

রেসিডেন্সি পরীক্ষার প্রিপারেশন 

জিনিসটা হাতুড়ির মত। লোহা দিয়ে লোহা পিটানোর মত। আকার চেঞ্জ করা যাবে, ইমপ্রুভ করা যাবে না। আর কেউই ফুল প্রিপারেশন নিয়া যেতে পারবে না। কারন ঘর সামলে, চাকুরী করে, ট্রেইনিং করে কেউই ফ্রি নাই পড়ার জন্য । তবে রেসিডেন্সি এর পরীক্ষার আগে মাস খানেক BSMMU লাইব্রেরীকে টেম্পোরারি ঠিকানা বানানো উচিৎ  (সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা)

এনাটমি :
বিডি চুরাশিয়া ও বেইলি লাভের সার্জিক্যাল এনাটমি এর প্যারা পড়তে হবে। এছাড়া কিছু নার্ভ, ব্লাড ভেসেল ইঞ্জুরি ইফেক্ট, ইমপোরট্যান্ট অর্গান রেগার্ডিং ফাইন্ডিংস ইত্যাদি জানা জরুরী।

ফিজিওলজি ও বায়োকেমিস্ট্রি :
জেনারেল ফিজিওলজি ভিশন অথবা গ্যানং থেকে। সাথে সাথে গুরুত্বপূর্ণ হলো -- রেনাল, ইলেক্ট্রোলাইট, রেস্পিরেটরি ও জি আই টি ভালো করে জানতে হবে। হরমোনের মেটাবলিজমে কি কি ইফেক্ট জানা জরুরী।

প্যাথলজি :
জেনারেল প্যাথলজি ও হেমাটোলজি পড়তে হবে খুব ভালো করে। স্যাড বাট ট্রু হলো - প্রশ্ন আসে রবিনস থেকে। তাই গাইড অথবা খালেক সম্পূর্ণ না। হেমাটোলজি থেকে বিশেষ করে ব্লিডিং ডিজওর্ডার গুলো, এনেমিয়া গুলোর ও লিউকেমিয়া এর স্পেসিফিক ফেচার ও ইনভেস্টিগেশন ।

ফার্মাকোলজিঃ
ফার্মার জন্য আগের ইয়ারের প্রশ্নের গাডলাইন টপিক ধরে পড়তে পারেন ।।

মাইক্রোবায়োলজি :
সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন আসে এই সাবজেক্ট থেকে। এই সাবজেক্ট এর জন্য আপনি পুরোটাই লেভিন্সন মাইক্রোবায়োলজি রিভিউ পড়ুন। তাও আন্ডার গ্রাজুয়েট আমলের। সেখানে পয়েন্ট করে দেয়া আছে। সব অরগানিজমের ফেচার গুলো জানতেই হবে। রেগার্ডিং অমুক অরগানিজম দিয়েই প্রশ্ন আসে ।

এই ছয় সাবজেক্টের Conscise প্রিপারেশন গাইডলাইন পাবেন মেডিকেল স্কলারের Basic Medical Science বইয়ে ( লিংকঃ https://goo.gl/x531Yd) যারা ব্যাসিক সাইন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল সাবজেক্টে এগজাম দিবেন, তাদের জন্য এই ব্যাসিক সাইন্স বই শর্ট প্রিপারেশনের জন্য যথেষ্ট হবে । আর যারা ক্লিনিক্যাল সাবজেক্টে পরীক্ষা দিবেন তাদের জন্য মেডিসিন ও পেডিয়াট্রিক ফ্যাকাল্টির জন্য ডেভিডসন আংকেলের বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ ছক সমূহ এবং সার্জারী ফ্যাকাল্টির জন্য - বেইলি লাভের গুরুত্বপূর্ণ ছক সমূহ দেখা জরুরী । কারন এই ক্লিনিক্যাল পার্ট থেকেক প্রায় ৪০-৫০ নাম্বার থাকে ... ।।

আর  পিছনের ৫ বছরের প্রশ্ন সলভ করা রেসিডেন্সি পরীক্ষার জন্য অত্যাবশ্যক ।। কারন গত ৫ বছরের কোয়েশ্চেন থেকে প্রায় ২০% প্রশ্ন রিপিট হয়...

যেহেতু নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে রেসিডেন্সি পরীক্ষা -তাই হাতে থাকা দেড় মাস ভালো করে কাজে লাগাতে পারলেও কেল্লা ফতে ।

বেস্ট অফ লাক ।। ।

রেসিডেন্সি ভালো মার্ক পাওয়ার কিছু ট্রিক্সঃ

১। রেসিডেন্সিতে সব সময় এনাটমি খুবি পিকুলিয়ার প্রশ্ন করে থাকে , তাই এনাটমি সবার পরে এন্সার করবেন ।। অনেক লম্বা লম্বা প্রশ্ন থাকে , কিন্তু তার মধ্যে কথা বার্তা সহজ থাকে ।

২। হাত ঘড়ি নিতে না দিলেও , দেয়াল ঘড়িতে তাকিয়ে সময়ের সাথে তাল মেলাতে ভুল করবেন না ।। প্রথম ১০০ এন্সার করতে যেন ৮০ মিনিটের বেশি না লাগে। কারন- বাদ পড়া ১০০ কিন্তু ঠিক হবে আপনার চিন্তা করার সময়ের উপর।। তাই তার জন্য একটু বেশি সময় রাখবেন ।।

৩। না পারলেও কোনো এন্সার ছেড়ে আসবেন না ।। ২০০ প্রশ্ন টাচ করেই আসবেন ।। কারন - এখানে ভুল হওয়ার চেয়ে সঠিক হওয়ার সম্ভাবনার মার্ক ৪ গুণ বেশি ।।

৪। যেই প্রশ্ন গুলো আনকমন মনে হবে, প্রশ্নের উপর ছোট করে দাগ টেনে যাবেন, তাহলে পরে খুঁজে পেতে সুবিধা হবে ।। প্রশ্ন যেহেতু ফেরত নিয়ে যাবে- রাফ খাতা হিসেবে ইউজ করা দোষের কিছু না ।

৫। সবচেয়ে টাইম কম লাগে মাইক্রো দাগাতে । তাই মাইক্রোর টাইমটা এনাটমিতে ইউজ করবেন ।।

৬। পাশের জনের কাছে সাহায্য চেয়ে আপনার আধা পারা উত্তর , পূর্ণ ভুল করে আসবেন না ।। নিজের উপর আত্মবিশ্বাস বাড়ান ।।

৭। প্রাকৃতিক ডাকের ব্যাপারটা এগজাম হলে ঢুকেই শুরুতে আসবেন । তিন ঘন্টার মাঝে যেন ডাকের জন্য টাইম না যায়। আর যদি গিয়ে দেখে টয়লেটে সিরিয়াল, তাই টয়লেটের ফ্লাশের সাথে রেসিডেন্সিও চলে যাবে ।

৮। প্রশ্নপত্রে বাম হাত রাখুন যেন আপনার ইনডেক্স ফিংগার প্রতি প্রশ্নের নাম্বারকে ইন্ডিকেট করবে, সাথে সাথে ডান হাতে OMR এর নাম্বারের গতি ছন্দ ঠিক রাখবেন । নয়তো - চোখে দেখা নাম্বার যদি ওএমআর এর আগে পিছনে হয়ে যায়, তাহলে পুরো কলাম ধরে জলে যাবে ।।

৯। প্রশ্নটা ভালো করে পড়ে OMR এ দাগাবেন । প্রশ্নে ছোট্ট করে not লেখা থাকতে পারে। এতে করে পুরো উত্তর মেরু , দক্ষিণ মেরু হয়ে যেতে পারে ।।

১০। হল দেখতে আধা প্রিপারেশন নিয়ে ফেল্টু খাইলে একবার কনফিডেন্স ডাউন হইলে , তারে তোলা বহুত কঠিন। তাই একবারেই পার হবেন- সেই টার্গেট রাখুন। সিরিয়াস হয়ে ৩০ দিন কাজে লাগান ।। সাথে সাথে ৩ দিন পর পর একটা পুরান প্রশ্ন যোগাড় করে ৩ ঘন্টায় তার উপর চর্চা করুন।। দেখুন ১৮০ মিনিটে তাকে সাবাড় করা যায় কিনা ।। এভাবে ৫টা প্রশ্নকে জবাই করতে পারলে এগজামে আপনার গতির সাথে পারতে খবর আছে ।। আর একটু জ্ঞানের ধাক্কা লাগলেই কেল্লা ফতে ।।

মেডিসিন ফ্যাকাল্টির জন্য- ডেভিডসন বক্স গুলো, সার্জারী ফ্যাকাল্টির জন্য- বেইলি লাভের বক্স গুলো- এক নজরে দেখে যাবেন ।

রেসিডেন্সি পরীক্ষার মার্ক ডিস্ট্রিবিউশনঃ 

গত পাঁচ বছরের প্রশ্নের মার্ক ডিস্ট্রিবিউশন এর গড় থেকে

১. মাইক্রোবায়োলজি - ৪০-৪৫
২. প্যাথোলজি - ৩৫-৪০
৩. ফার্মাকোলজি - ২০-২৫
৪. এনাটমি - ২৫-৩০
৫. ফিজিওলজি ও বায়োকেমিস্ট্রি - ৩৫-৪০
৬. ফ্যাকাল্টি বেজড কোয়েশ্চেন- ৩৫-৪০
(সার্জারি ফ্যাকাল্টির সার্জিক্যাল কন্ডিশন বেইলি লাভ থেকে, মেডিসিন ফ্যাকাল্টির মেডিকেল কন্ডিশন ডেভিডসনের ছক থেকে, ব্যাসিক সাইন্স ফ্যাকাল্টির ক্ষেত্রে ক্লিনিক্যাল টপিক বাদ দিয়ে ১-৫ এর সাব্জেক্ট গুলোতে ৫ টা করে বেশি প্রশ্ন আসে)

এখানে উল্লেখ্য- রেডিওলজি ও এনেস্থিসিয়াতে এমডি এগজাম হলেও প্রিপারেশন নিতে হবে সার্জারি ফ্যাকাল্টির....

যেহেতু লিমিটেড সিট,  তাই পরীক্ষায় মার্ক কমপিটিশন হয়। সর্বোচ্চ মার্ক ও নিড নাম্বার ক্যান্ডিডেট হিসেব করে নির্বাচিত করা হয়।।  এফসিপিএস পরীক্ষার মত কোনো পাশ মার্ক নাই।।

সুতরাং -প্রস্তুতি হতে হবে শতভাগ।। কারন আপনি অনেক মার্ক পেয়েও বাদ যেতে পারেন, যদি আপনার বন্ধু ১ মার্ক বেশি পেয়ে যায়।।

রেসিডেন্সি এমডি/ এমএস পরীক্ষায় ফ্যাকাল্টি ভিত্তিক প্রিপারেশন :

1.  ব্যাসিক সাইন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল ফ্যাকাল্টি :

এক কথায় বললে - এমবিবিএস এর ফার্স্ট প্রফ ও সেকেন্ড প্রফের সাবজেক্ট গুলো থেকে প্রশ্ন থাকবে। :p :p তবুও গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে মাইক্রোবায়োলজি,  প্যাথলজি ও ফিজিওলজি। মাইক্রোবায়োলজি থেকে প্রায় এক তৃতীয়াংশ প্রশ্ন থাকে। এনাটমিও আসে বিশাল লম্বা লম্বা প্রশ্ন,  সেটা আপনার টাইম খাওয়ার জন্য যথেষ্ট। তাই এনাটমি সবার পরে এন্সার করলে ভালো।

২) মেডিসিন ফ্যাকাল্টি :

মেডিসিন ফ্যাকাল্টিতে অনেকেই ডেভিডসন দিয়া প্রিপারেশন শুরু করেন। এটা ভুল প্রক্রিয়া। রেসিডেন্সি তে মেডিসিনের যেসব ডিজেজ আসে তা প্যাথলজি থেকেই কমন পড়ে যায়। তাই এই ফ্যাকাল্টি এর প্রশ্ন মেইনলি প্যাথলজি (৪৫)ও ফিজিওলজি (৪৫)  বেজড। সাথে করে এনাটমি(৩০),  মাইক্রোবায়োলজি(৪০), বায়োকেমিস্ট্রি (১৫) ও অন্যান্য থেকে। কমন কিছু বাংলাদেশী ইনফেকশন পড়তে হবে ভালো করে,  সেই গুলোর জন্য লেঞ্জ রিভিউ ও রবিন্স যথেষ্ট।

৩।  সার্জারি ফ্যাকাল্টি:

সার্জারি ফ্যাকাল্টি এর প্রশ্ন সাধারণত মাইক্রোবায়োলজি (৫৬) ,  সার্জারী ও সার্জিক্যাল এনাটমি (৫০) বেজড। সাথে সাথে প্যাথলজি, ফিজিওলজি  ও বায়োকেমিস্ট্রিও ভালো অংশ জুড়ে থাকে।  কিছু কিছু কমন সার্জিক্যাল ডিজেজ এর বর্ননা জানা জরুরী ( যেমন প্রোস্টেট এনলারজমেন্ট , এপেন্ডিসাইটিস,  টেস্টিস, ইন্টেস্টিনাল অবস্ট্রাকশন, বার্ন ইত্যাদি)।

#কোয়েশ্চেন নাম্বার গুলো প্রিভিয়াস ৩ বছরের প্রশ্নের সংখ্যার গড় করে।


সব ফ্যাকাল্টির কমন প্রিপারেশন এর জন্য স্বল্প সময়ের জন্য উপযোগী ডাইজেস্ট - "ব্যাসিক মেডিকেল সাইন্স"।।

বিস্তারিত দেখুনঃ https://goo.gl/CZzWum

🏥🏥MD/MS রেসিডেন্সি  পরীক্ষার্থীদের জন্য আবশ্যক টিপসঃ 🐎🐎

1) 🕘🕘🕘 সময় ১৮০ মিনিট, প্রশ্ন ২০০ (তার মধ্যে স্টিম ৫টা করে ,তার মানে ১০০০টা প্রশ্ন) তাই সময়ের মূল্য দিতে হবে চরম ভাবে। প্রতি সেকেন্ডের হিসাব রাখতে হবে।

2)🚽🚽 খেয়াল রাখতে হবে প্রথম দিকে ঢিলামি করে শেষের দিকে যেন পারা কিছু ফেলে রেখে না আসেন। ৩ঃ২ অনুপাতে ট্রু ফলস উত্তর থাকবে, তাই সব ট্রু সব ফলস দেয়ার চেষ্টা করবেন না। 📃📃📃কলাম ঠিক রেখে ওএমআরশিট ফিল করবেন প্লিজ।। 🏃🏃

3) 👼👼🐌🐌🐌যেই গুলো সিউর হবে সেই গুলো আগে দিয়ে ফেলুন খুব দ্রুত ভাবে। নয়তো পরে কনফিউজিং গুলো নিয়ে চিন্তা করার টাইম পাবেন না।🙇🙇🙇

4) 👀👀👀ভুলেও কোনো ঘর ফাঁকা রেখে আসবেন না। কারন ফাঁকা রাখার চেয়ে ভরাট করে আসলে নাম্বার বাড়ার চান্স বেশী। কারন নেগেটিভ মার্ক খুবই তুচ্ছ পরিমাণ এই পরীক্ষায়। 💨💨💨

5) নাম, রোল, ফ্যাকাল্টি ফিল আপ করবেন সাবধানে। কলম, পেন্সিল ,ইরেজার নিতে ভুলবেন না। আর প্রবেশ পত্র রাতেই ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখুন। ইলেক্ট্রনিক্স জিনিস পত্র (মোবাইল) নিয়ে যাবেন না। 💼💼💼🖋🖊🖌🖌📝

6) ভুলে যাবেন না – কনফিডেন্স মানুষ কে ঠকালেও , ধোকা দেয় না। মানে হলো – ভুল জেনেও সব গুলো সেম স্টিম দিয়ে আসলেও কিছু পজিটিভ মার্ক পাবেন –এটা কনফিডেন্টলি বলতে পারবেন। 🐷🐷🐵🐵

7) ✅✅✅🚸🚸 পরীক্ষার আগের রাত গুলোতে বেশী জাগতে হয় না। ফ্রেশ ঘুম ব্রেইন কে খুলে দিতে পারে। রাত জাগলে ঢাকায় জ্যামের মত মাথায়ও জ্যাম লাগতে পারে। 🔜🔜🔜

8;) অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি – বিদ্যার চেয়ের বুদ্ধির দৌড় রেসিডেন্সি এমডি/এমএস পরীক্ষায় বেশী হেল্প করে। তাই জেনে বুঝে পরীক্ষা দিন।  🛠🔧🔩🛠

9)🚴🚴🚴🚴 পরীক্ষার্থী সকাল  ৮টায় কেন্দ্রে চলে যাবেন। এগজাম ৯টায় এটা ভুলে যাবেন না। যারা ১০ টায় পরীক্ষা ভেবে যাবেন, তাদের জন্য ১ ঘন্টা নীরবতা।। 🏄🏄🏄

10) 🎈🎈🎈🎈🎈ভেবে  নিন-  জয় সুনিশ্চিত। তাই এই দুর্জয় লড়াই। ✨🎊🎊🎈